empty
29.04.2025 10:55 AM
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা চলছে। ট্রেডাররা ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে (EUR/USD এবং GBP/USD পেয়ারের দরপতনের ঝুঁকি রয়েছে)

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি শিগগিরই হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে মার্কেট আবারও স্থবির হয়ে গেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প যে গোটা বিশ্বের ওপর — বিশেষ করে ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটের ওপর — অনিশ্চয়তার মেঘ সৃষ্টি করেছেন, তা দ্বিতীয় মাসেও অব্যাহত রয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার প্রথম 100 দিন শেষ হয়ে আসছে, অথচ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারে কার্যত সবকিছুর সরবরাহকারী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধের কোনো সমাধান দেখা যায়নি। সমস্যা সমাধানে ট্রাম্পের 'ক্যাভেলরি স্টাইল' আক্রমণ আংশিক সফল হলেও, প্রধান বাণিজ্য অংশীদার চীন মাথা নত করেনি, বরং তথাকথিত "সম্রাট"-এর (ট্রাম্পের নিজের দৃষ্টিতে) সামনে দেশটি নতিস্বীকার করেনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখনো ফাঁদে পড়া প্রাণীর মতো লড়াই করে যাচ্ছেন—একদিকে হুমকি, অন্যদিকে ট্রেজারি সেক্রেটারির মাধ্যমে চীনা কর্তৃপক্ষকে সমঝোতার দিকে রাজি করানোর চেষ্টা। সোমবার, যখন ওয়াশিংটন ও বেইজিং-এর মধ্যকার বাণিজ্য সংকট প্রশমনের প্রসঙ্গেকথা হচ্ছিল তখন স্টিভেন বেসেন্ট সোজাসুজি বলেছিলেন, "সবকিছু চীনের ওপর নির্ভর করছে।" আলোচনা আদৌ চলমান কিনা, তা নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে বিনিয়োগকারীরা প্রায় সব মার্কেট সেগমেন্টে ট্রেডিং কার্যক্রম হ্রাস করেছে। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির চলমান বাণিজ্য সংঘাত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্থরতা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

মার্কেটের ট্রেডাররা এই সপ্তাহে প্রকাশিতব্য চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছে। এই প্রতিবেদনগুলোতে মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ধীরগতির ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে — যা 2.4% থেকে প্রায় শূন্যে (0.2%) নেমে আসতে পারে — এবং চীনে ব্যবসায়িক কার্যকলাপেও হ্রাস দেখা যেতে পারে, যে দেশটি কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার।

মার্কেটে দুর্বল মুভমেন্ট সত্ত্বেও, ট্রেডাররা এখনো আশাবাদী যে দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থার পর সাধারণ বুদ্ধিবৃত্তির জয় হবে এবং উভয় পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছাবে। অন্যথায়, মন্থর বৈশ্বিক অর্থনীতি এমন জটিল পরিস্থিতিতে পড়তে পারে, যার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হুমকির পথ বেছে নিতে পারে।

অর্থনৈতিক বিষয়ে ফিরে গেলে দেখা যাচ্ছে: যদিও যুক্তরাষ্ট্রে বছরটি মোটামুটি ভালোভাবেই শুরু হয়েছে — প্রথম ত্রৈমাসিকে বার্ষিক ভিত্তিতে দেশটির জিডিপি 2.4% বৃদ্ধি পেয়েছে — তবে প্রত্যাশিত প্রায়-শূন্য প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও উৎপাদন সূচকে সম্ভাব্য পতনের সাথে মিলিত হয়ে ডলারের উল্লেখযোগ্য দরপতনের কারণ হতে পারে। এতে করে ফেডারেল রিজার্ভ হয়তো মে–জুনেই সুদের হার কমানোর দিকে যেতে পারে।

আজ মার্কেটের ট্রেডারদের দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের কনফারেন্স বোর্ডের ভোক্তা আস্থা সূচকের দিকে থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে এপ্রিল মাসে এটি 92.9 থেকে কমে 87.7 পয়েন্টে নামবে। এদিকে, JOLTS জব ওপেনিংস বা চাকরির শূন্যপদ সংক্রান্ত প্রতিবেদনেও হ্রাস প্রতিফলিত হতে পারে — যেখানে শূন্যপদ কমে 7.568 মিলিয়ন থেকে 7.490 মিলিয়নে নামতে পারে। যদিও এই সংখ্যা কোভিড-১৯ মহামারির সময়ের তুলনায় সংকটজনক নয়, তবুও এটি নিম্নমুখী প্রবণতা নির্দেশ করে।

আজ মার্কেটে কী প্রত্যাশা করা যেতে পারে:

আমরা বলতে পারি যে, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির কোনো খবর না থাকলে বিনিয়োগকারীদের কার্যক্রম একইরকম থাকবে।

  • স্টক সূচকগুলো সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার প্রচেষ্টার মধ্যে কনসোলিডেট হতে পারে।
  • ক্রিপ্টোকারেন্সি ও কমোডিটি মার্কেটে সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, মূলত শুল্ক সংক্রান্ত খবর ও আসন্ন মার্কিন তেল মজুত সংক্রান্ত প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায়।
  • ফরেক্স মার্কেটে, মার্কিন ডলার সূচক সম্ভবত 98.00 থেকে 100.00 পয়েন্টের মধ্যে কনসোলিডেট করবে।
  • মার্কেটে কেবল তখনই "সক্রিয় মুভমেন্ট" দেখা যেতে পারে যদি বাণিজ্য আলোচনায় অপ্রত্যাশিত কোনো অগ্রগতির খবর প্রকাশিত হয় — যেটা বেইজিং আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকার করছে যে এমন কিছু গোপনে চলছে।

দৈনিক পূর্বাভাস:

This image is no longer relevant

This image is no longer relevant

EUR/USD
এই পেয়ারটির মূল্য বর্তমানে 1.1345 লেভেলের উপরে কনসোলিডেট করছে। ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতির হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাব্য খবর এই পেয়ারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং 1.1345 সাপোর্ট লেভেল ব্রেক করে 1.1200 এর দিকে দরপতনের সম্ভাবনা উন্মুক্ত হতে পারে।

এই পেয়ার বিক্রয়ের জন্য সম্ভাব্য লেভেল হতে পারে 1.1329।

GBP/USD
এই পেয়ারের মূল্য 1.3434 লেভেল স্পর্শ করেছে, যা সর্বশেষ দেখা গেছে 26 সেপ্টেম্বর, 2024-এ, এবং এখন একটি স্থানীয় নিম্নমুখী রিভার্সাল দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যে, EY Item Club পূর্বাভাস দিচ্ছে যে ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে আসবে, যার ফলে 2025 সালের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস 1% থেকে হ্রাস পেয়ে 0.8% এবং 2026 সালের পূর্বাভাস 0.9%-এ নেমে এসেছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র–চীনের মধ্যকার আলোচনায় অগ্রগতির খবরে ডলার শক্তিশালী হয়, তাহলে এই পরিস্থিতি পাউন্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3300 এর দিকে নেমে যেতে পারে।

এই পেয়ার বিক্রয়ের জন্য সম্ভাব্য লেভেল হতে পারে 1.3378।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.