empty
 
 
23.06.2025 08:56 AM
ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে "দীর্ঘমেয়াদি জবাব" দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে

This image is no longer relevant

মার্কিন বোমারু বিমান কর্তৃক ইরানের উপর রাতভর বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই—ইরান থেকে ছোড়া হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র। তবে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বা সম্পদ এই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল না, বরং ইসরায়েলের উপর আক্রমণ করা হয়েছে, যা ভৌগোলিকভাবে ইরানের অনেক কাছাকাছি অবস্থিত। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, ইরান পাল্টা জবাব দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে। তিনি সতর্ক করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে।

আরাকচির ভাষ্যমতে, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT) সরাসরি লঙ্ঘন করেছে। ইরান যুক্তি দিয়েছে, একই যুক্তির ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের যেকোনো পারমাণবিক স্থাপনাকে "বিপজ্জনক হুমকি" আখ্যা দিয়ে আক্রমণ করতে পারে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, "জাতিসংঘ সনদ আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে বৈধ প্রতিক্রিয়ার অনুমতি দেয়। ইরান তার সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থ এবং জনগণকে রক্ষা করার অধিকার রাখে।"

উল্লেখযোগ্য যে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচীর ইতিহাস বরাবরই ধোঁয়াশায় ঘেরা। কয়েক দশক ধরে ইরানি কর্তৃপক্ষ দাবি করে আসছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের অনেক দেশ সন্দেহ পোষণ করে যে, ইরান পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ওয়ারহেড তৈরি করছে, যেগুলোকে "বেসামরিক গবেষণা" হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। অনেক পারমাণবিক স্থাপনাই ভূগর্ভে নির্মিত হওয়ায় বাইরের দৃষ্টিসীমা বা স্যাটেলাইটেও সেগুলো অদৃশ্য থাকে। স্বাভাবিকভাবেই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সক্রিয় রয়েছে, এবং ইরান যে শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করছে—তা মনে করার বিশেষ কারণ নেই, বিশেষ করে যখন অঞ্চলটিতে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

This image is no longer relevant

তবুও বাস্তবিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ থাকলেও তারা তা অস্বীকার করে এবং ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে অর্থনীতিকে চাপে রাখা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে চলেছে। আমার মতে, এই পর্যায়ে এসেও তেহরান স্বেচ্ছায় পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করবে এমন সম্ভাবনা নেই। ইরানের তা করার জন্য প্রায় ৪০ বছর সময় ছিল। এখনও পর্যন্ত তা না করা মানেই, পারমাণবিক কর্মসূচীর উন্নয়ন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বা বিশ্বের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। ফলে, এই সংঘাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনাই বেশি, এবং দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি আঘাত হানতে থাকবে।

সোমবার ডলার কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে?

এটি একটি জটিল প্রশ্ন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন ডলার "নিরাপদ বিনিয়োগ" হিসেবে তার অবস্থান হারিয়েছে। এখন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি একটি আন্তর্জাতিক সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে গেছে। বিনিয়গকারীকে এই ঘটনাকে ইতিবাচকভাবে দেখবে কিনা বা মার্কিন মুদ্রার চাহিদা বাড়বে কিনা সে ব্যাপারে আমি সন্দিহান।

EUR/USD-এর ওয়েভ স্ট্রাকচার:

EUR/USD পেয়ারের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে আমি এই উপসংহারে পৌঁছেছি যে, এই ইনস্ট্রুমেন্ট এখনো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার একটি সেগমেন্ট গঠন করছে। এই পেয়ারের ওয়েভ প্যাটার্ন এখনো সম্পূর্ণভাবে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ও মার্কিন বৈদেশিক নীতিমালা সংক্রান্ত খবরের উপর নির্ভর করছে। ওয়েভ ৩-এর লক্ষ্যমাত্রা 1.25 লেভেল পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। তাই, আমি 1.1708 লেভেলের আশেপাশে প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বাই পজিশনের কথা বিবেচনা করছি, যা 127.2% ফিবোনাচ্চি লেভেলের কাছাকাছি অবস্থিত। বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমিত হলে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সমাপ্তি ঘটতে পারে, কিন্তু বর্তমানে এমন কোনো লক্ষণ নেই—না মূল্যের বিপরীতমুখী হওয়ার, না বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমনের।

This image is no longer relevant

GBP/USD-এর ওয়েভ স্ট্রাকচার:

GBP/USD পেয়ারের ওয়েভ প্যাটার্ন অপরিবর্তিত রয়েছে। এটি একটি ঊর্ধ্বমুখী ইমপালসিভ ট্রেন্ড সেগমেন্ট। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন অবস্থায় মার্কেটের ট্রেডাররা হয়তো আরও অনেক অপ্রত্যাশিত ধাক্কা ও মূল্যের বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতার মুখোমুখি হবে, যা ওয়েভ স্ট্রাকচারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু বর্তমানে মূল পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে, এবং ট্রাম্প এখনও ডলারের চাহিদা কমিয়ে দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঊর্ধ্বমুখী ওয়েভ ৩-এর লক্ষ্য 1.3708 লেভেলের কাছাকাছি অবস্থিত, যা গ্লোবাল ওয়েভ ২ থেকে 200.0% ফিবোনাচ্চি লেভেলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই আমি এখনো বাই পজিশনের কথাই বিবেচনা করছি, কারণ মার্কেটে এখনো প্রবণতার বিপরীতমুখী হওয়ার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।

আমার বিশ্লেষণের মূল নীতিমালা:

  • ওয়েভ স্ট্রাকচার সহজ ও স্পষ্ট হওয়া উচিত। জটিল স্ট্রাকচারে ট্রেড করা কঠিন এবং তা প্রায়শই পরিবর্তিত হয়।
  • যদি মার্কেটে কী ঘটছে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে, তাহলে ট্রেড করা থেকে বিরত থাকাই ভালো।
  • মূল্য কোন দিকে যাবে তা নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায় না। তাই স্টপ লস অর্ডার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
  • ওয়েভ বিশ্লেষণকে অন্যান্য ধরণের বিশ্লেষণ ও ট্রেডিং কৌশলের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করা যায়।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.