empty
 
 
11.12.2025 12:07 PM
ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির ডিসেম্বর বৈঠকের ফলাফল

মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ টানা তৃতীয়বারের মতো সুদের হার হ্রাস করার পাশাপাশি ২০২৬ সালে কেবল একবার এবং ২০২৭ সালে আরেকবার সুদের হার কমানোর পূর্বাভাস দেয়ার পরে, মার্কিন ডলার আবারও চাপের মুখে পড়ে।

This image is no longer relevant

বুধবার, ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি (FOMC) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে (৯ বনাম ৩) ফেডারেল সুদের হার এক চতুরাংশ শতাংশ কমিয়ে ৩.৫% থেকে ৩.৭৫% স্তরে নামিয়ে আনে। ফেড কমিটি তাদের বিবৃতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনে—যা থেকে বোঝা যায়, পরবর্তীতে কবে সুদের হার কমানো হতে পারে তা নিয়ে আরও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত মার্কিন ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে, তবুও অধিকাংশ ট্রেডার যে মাত্রার দরপতনের আশা করেছিল, তার তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম ছিল।

যদিও সুদের হার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিতই ছিল, তবুও এটি বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, মুদ্রানীতি অতিরিক্ত নমনীয় করা মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে, যা এখনো ফেডের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ২%-এর লক্ষ্যমাত্রার ওপরে রয়ে গেছে।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই মুহূর্তে আরও সতর্ক নীতিমালাই গ্রহণ করাই শ্রেয় ছিল—যেমনটি বৈঠকের পর ফেডের দুইজন কর্মকর্তাও মন্তব্য করেছেন। ক্যানসাস সিটি ফেডারেল রিজার্ভের প্রেসিডেন্ট জেফ স্মিড এবং শিকাগো ফেডারেল রিজার্ভের প্রেসিডেন্ট অস্টান গুলসবি দু'জনই সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

তবুও, ফেড মনে করে যে শ্রমবাজারের দুর্বল পরিস্থিতির মাঝেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করতে সীমিত পর্যায়ে সুদের হার কমানো দরকার ছিল।

বৈঠক-পরবর্তী সাংবাদিক বৈঠকে চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, শ্রমবাজারের দুর্বল পরিস্থিতি সত্ত্বেও অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ফেড যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং তারা মূল্যস্ফীতির হ্রাস বজায় রাখার জন্য সুদের হার যথেষ্ট উচ্চ স্তরে বজায় রেখে চলেছে।

তিনি বলেন, তাদের নীতিমালার আরও নমনীয়করণ শ্রমবাজারকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে এবং মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে ২%-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে নেমে আসবে।

সুদের হার কমানো কি প্রয়োজনীয় ছিল জিজ্ঞাসা করা হলে পাওয়েল সরাসরি উত্তর না দিলেও তিনি যোগ করেন যে, সুদের হার হ্রাসকে তিনি 'মূল পরিকল্পনা' হিসেবে দেখছেন না।

This image is no longer relevant

বর্তমানে, বিনিয়োগকারী ও ট্রেডাররা আগামী বছরে সুদের হার কমানোর পূর্বাভাস তিনবার থেকে কমিয়ে দুইবারে নামিয়ে এনেছেন। বুধবারের বিভক্ত মতামত ও পূর্বাভাসগুলোতে স্পষ্টভাবে দেখা যায় যে, মার্কিন অর্থনীতির জন্য কোনটির হুমকি বেশি—শ্রমবাজারের দুর্বল পরিস্থিতি, না দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি—এই নিয়ে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে ব্যাপক বিভক্তি রয়েছে।

বর্তমানে দেশটির বেকারত্বের হার ৪.৪%-এ পৌঁছেছে, যা পূর্বের ৪.১% থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেডের পছন্দসই মূল্যস্ফীতি অনুমান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ২.৮%—যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২% লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক বেশি।

ফেডের নতুন অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে ২০২৬ সালে একবার এবং ২০২৭ সালে আরেকবার সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে সুদের হারের ভবিষ্যৎ রূপরেখা এখনো ব্যাপক বিতর্কের বিষয়। ফেডের সাতজন কর্মকর্তা ২০২৬ পর্যন্ত সুদের হার বর্তমান স্তরেই বজায় রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন, অন্যদিকে আটজন কর্মকর্তা কমপক্ষে দুইবার সুদের হার হ্রাসের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

ফেড ২০২৬ সালের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়ে ১.৮% থেকে ২.৩%-এ উন্নীত করেছে। ভবিষ্যৎ পূর্বাভাসে তারা আশা করছে, আগামী বছরে মূল্যস্ফীতি ২.৬% থেকে হ্রাস পেয়ে ২.৪%-এ নামবে।

সুদের হার কমানোর এই সিদ্ধান্ত মার্কিন ডলারের ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে।

বর্তমান EUR/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ক্রেতারা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1710 লেভেলে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই পেয়ারের মূল্য এই লেভেলে পৌঁছাতে পারলে 1.1725 লেভেলে পৌঁছানোর সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে। সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য 1.1750-এর দিকে অগ্রসর হতে পারে, যদিও বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এটি করা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1777-এর লেভেল।যদি এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্টটির মূল্য নিম্নমুখী হয়, তাহলে মূল্য 1.1675 লেভেলের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় বড় ক্রেতাদের সক্রিয় পদক্ষেপের প্রত্যাশা করা যায়। যদি সেখানে কোনো উল্লেখযোগ্য ক্রয় কার্যকলাপ দেখা না যায়, তাহলে এই পেয়ারের মূল্যের 1.1650 লেভেলে নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা বা 1.1615 থেকে লং পজিশন ওপেন করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

GBP/USD পেয়ারের টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, পাউন্ড ক্রেতাদের প্রথমে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3390 লেভেলের নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স পুনরুদ্ধার করতে হবে। এতে সফল হলে পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3420—যার উপরে ব্রেকআউট পাওয়া কিছুটা কঠিন হতে পারে। পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3440 লেভেল নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারের দরপতনের হয়, তাহলে মূল্য 1.3350 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে এই রেঞ্জ ব্রেকডাউনের মাধ্যমে বুলিশ পজিশনগুলো গুরুতরভাবে ধাক্কা খাবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3320-এর নিচে নেমে যেতে পারে, এবং সেখান থেকে 1.3285 পর্যন্ত দরপতনের সম্ভাবনাও তৈরি হবে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.